Football
প্রয়াত বাবার স্বপ্নকে সার্থক করে মোহনবাগান জুনিয়র টিমের অধিনায়ক সন্দীপ মালিক
কলকাতা ময়দানের চলতি প্রিমিয়ার লিগে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট জুনিয়র টিমের অধিনায়ক হয়েছেন মুকুন্দপুরের নির্ভরযোগ্য রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সন্দীপ মালিক

বিদ্যুৎ ভৌমিক। ২রা জুলাই ২০২৫ । কথায় আছে, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় । আবার ইচ্ছা থাকলে স্বপ্নপূরণও হয়। সেই কাঙ্খিত স্বপ্ন বাস্তবে ডানা মেলে । এই নিবন্ধে তরুণ ফুটবলার সন্দীপ মালিকের কথা উঠে এসেছে । একটা সময় তার বাবা স্বপ্ন দেখতেন, তাঁর ছেলে সবুজ মেরুন জার্সিতে মোহনবাগান দলে খেলবে । কারণ তিনি মোহনবাগানের গোঁড়া সমর্থক ছিলেন । তিনিও ফুটবল খেলতেন । কিন্তু সংসারের জাঁতাকলে পড়ে একরকম বাধ্য হয়ে ফুটবল খেলা ছেড়ে কর্পোরেশন অফিসের চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি করাকালীন তিনি ছেলের ফুটবলে অসীম আগ্রহ দেখে মনে অলীক স্বপ্নের জাল বুনেছিলেন যে,নিজের অপূর্ণ স্বপ্নকে ছেলে বাস্তবে রূপায়িত করবে । সেই অপূর্ণ স্বপ্ন আজ সার্থকতা লাভ করেছে । তাঁর ছেলে সন্দীপ মালিকের শুধুমাত্র মোহনবাগান জুনিয়র টিমের জার্সি গায়ে ওঠে নি , এমন কি দলের অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড হাতে উঠে এসেছে । এ কম কথা নয় । কিন্তু এমনই আনন্দের দিনে সেই বাবার অনুপস্থিতি সন্দীপকে একেবারে কোনঠাসা করে রেখেছে । সব ছেলের এই অভাবনীয় সাফল্য সব বাবার কাছে আনন্দের ও গর্বের । কিন্তু সন্দীপের বাবার পরলোকগমনের কারণে তাঁর স্বপ্নপূরণ তিনি দেখে যেতে পারলেন না এটাই আফসোস ।
সূত্র মারফৎ জানা যায় যে, কলকাতা ময়দানের চলতি প্রিমিয়ার লিগে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট জুনিয়র টিমের অধিনায়ক হয়েছেন মুকুন্দপুরের নির্ভরযোগ্য রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সন্দীপ মালিক। সন্দীপের ফুটবলে উঠে আসা বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল স্পোর্টস অ্যাকাডেমি থেকে । দলে সালাউদ্দিন আদনানের মতো সিনিয়র প্লেয়ার থাকা সত্ত্বেও নেতৃত্বে দায় দায়িত্ব এসেছে সন্দীপ মালিকের কাঁধে।কারণ মাস কয়েক আগে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগের খেলায় মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন করে তোলার পথে সন্দীপ মালিকের অবদান অনস্বীকার্য । দুঃখের সঙ্গে সন্দীপ জানালেন যে, ছোটবেলায় বাবাকে ক্যান্সার রোগ হারিয়েছি। পরিবারের স্বার্থে বাবাকে খেলা ছাড়তে হয়েছিল ।পরে বাবা আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন। এখন এত বড় সুযোগ পেয়েছি, অথচ বাবাই আজ পাশে নেই।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ২০ বৎসর বয়সী সন্দীপ মালিক মূলতঃ মিডফিল্ডার । তার এখন অনেক কিছু প্রমাণ করার বাকি, সেই গুরুদায়িত্ব বর্তেছে তার ওপর।মোহনবাগান জুনিয়র টিমের অধিনায়ক বলে কথা।বাবার অকালপ্রয়াণে বাবার মরা চাকরিটা মা ঝর্ণা মালিক করছেন । বাড়িতে এক ছোট বোন আছে, স্কুলে পড়ে ।সন্দীপের লড়াই ঘরের সঙ্গে ও খেলার মাঠেও।জানালো, মা আমার জন্য অনেক কিছু ত্যাগস্বীকার করেছেন । মাকে যাতে উপার্জনের জন্য আর কষ্ট করতে না হয় তার চেষ্টা করছি।একটা কথা বলাই বাহুল্য যে, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ক্লাবের সিনিয়র ও জুনিয়র টিমের অধিনায়ক দুই বাঙালি ফুটবলার ।সিনিয়র দলের অধিনায়ক শুভাশিস বসুর পথ অনুসরণ করে সন্দীপ জানিয়েছে, শুভাশিসদা আমার প্রেরণা । দীপেন্দুদা ( বিশ্বাস ), সুহেল ভাটের মতো আমাকেও সিনিয়র দলে খেলার যোগ্যতা ছিনিয়ে নিতে হবে । তার জন্য আমার কঠিন লড়াই ময়দানের সবুজ ঘাসে।

Comments