Haldia

কারখানার পর এবার আবাসনের সম্পদ লুঠ

কারখানার সম্পদ লুঠের পর এবার আবাসনের সম্পদ লুঠ হচ্ছে, সাধারণ মানুষ বাধা দিতে গেলে হুমকি দিচ্ছে নিরাপত্তারক্ষীরা।

হলদিয়াতে HFC কারখানা শুরু হয়েছিল বহুদিন আগে। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থা। হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠার পরে, হলদিয়া হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার লিমিটেড নামে একটি কারখানা গড়ে ওঠে। এই জায়গাটি হলদিয়া বন্দরের তরফ থেকে কারখানা গড়ার জন্য দেওয়া হয়েছিল। বতর্মানে কারখানার ভিতরের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কাটিং হয়ে জলপথে বিক্রি হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন জমি ফিরানোর ব্যাপার নিয়ে আইনি লড়াই চলে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সেন্ট্রাল মেলেটারি ফোর্স ওই জায়গা থেকে তুলে নেবার পর বর্তমানে বেসরকারি একটি সংস্থাকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

 কিন্তু এই কারখানায় উৎপাদনের কাজ শুরু হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। কারখানার কর্মীদের জন্য গড়ে উঠেছিল হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকা টাউনশিপে বহু আবাসন। বতর্মানে সেই আবাসন গুলি এখন ভুতুড়ে বাড়ির আকার ধারণ করেছে। হলদিয়া টাউনশিপ এলাকায় নিজস্ব হাসপাতাল, অডিটোরিয়াম, খেলার মাঠ এবং আবাসনের এলাকায় জল দেওয়ার জন্য নিজস্ব পাম্প হাউসও গড়ে উঠেছিল সেই সময়। কিন্তু এই কারখানাটি বন্ধ হওয়ার পরেই, এই কারখানার কর্মীরা বিভিন্ন কারখানায় চলে যান। তাই কর্মীদের আবাসন গুলি ফাঁকা হয়ে যায়। সেই সকল আবাসন গুলির দরজা-জানলা সহ সবই লুঠ হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।


স্থানীয় মানুষের অভিযোগ

 এই বিষয়ে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ - এখন বিল্ডিংয়ের ইট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, তার সাথে প্রত্যেকটি বিল্ডিং এর জলের পাইপ লাইন, পাম্প হাউসে ভাল্ব সহ লোহার পাইপ সবই চুরি হয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। দিনের বেলায় সিকিউরিটি দাঁড়িয়ে থেকে সেইগুলি বিক্রি করে দিচ্ছে বলে জানালেন ওই এলাকার মানুষজন। কারখানার প্রাক্তন কর্মী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন - 

" আমরা দেখছি আমাদের চোখের সামনে থেকে কারখানার ভিতরের পুরো কারখানাটাই কাটিং হয়ে নদীপথে এবং সড়ক পথে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কয়েক লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছিল ভিতরে। কারণ কারখানাটি একটি কেমিক্যাল কারখানা আর তার জন্য প্রায় পাঁচ লক্ষ বিভিন্ন ধরনের দামি গাছও লাগানো হয়েছিল, সেই গাছগুলিও অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল। আর এখন ‌‌সেই গাছগুলোও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে" বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ভারতীয় মজদুর সংঘের সভাপতি প্রদীপ বিজলীর অভিযোগ

 ভারতীয় মজদুর সংঘ বিএমএস রাজ্য সভাপতি প্রদীপ বিজলী বলেন - " হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় বহু গাছ কাটা হয়ে বিক্রি হয়ে গেছে। বর্তমানে এইচএফসি কারখানা ওই জায়গাটি খুব শীঘ্রই হলদিয়া বন্দরকে হস্তান্তর করবে। আর তার আগেই সমস্ত জিনিস দিন দুপুরে চুরি করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।"

 এছাড়া তিনি বনদপ্তরের কাছে আবেদন জানান যে, বনদপ্তর যেন ওই এইচএফসি (হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার লিমিটেড) এলাকায় গিয়ে দেখেন এবং তদন্ত করেন - যে ওই গাছগুলি কোথায় গেল? এবং এই বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও আবেদন করছেন। এছাড়া হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন জানান যে, ওই জায়গাটি যেন দ্রুত হস্তান্তর করা হয়, তা না হলে বর্তমান এইচএফসির কারখানার জিএম যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আগামী দিনে ওই জায়গা নদীর সঙ্গে মিলিয়ে দিতেও তিনি দ্বিধা করবেন না। বন্ধ কারখানার ভেতর থেকে  ডাম্পারে করে মাটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন এবং এই বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।