India Pakistan
৭ই মে দেশ জুড়ে চলবে অসামরিক মহড়া, হবে "ক্র্যাশ ব্ল্যাক আউট" - এই সময় আমাদের করণীয় কী?
'মক ড্রিল', 'ক্র্যাশ ব্ল্যাক আউট' কী? এই সময় কি কি করা উচিত? আর কি করা উচিত নয়?

পেহেলগাঁওয়ে ২৬ জন হিন্দু পর্যটকদের ওপর নৃশংস জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ভারত সরকার একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। জঙ্গিরা বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে অর্থাৎ ধর্মের ভিত্তিতে তারা হত্যা লীলা চালিয়েছে আর তাদের সেই জঙ্গি কার্যকলাপে নিলজ্জের মতো মদত দিয়েছে পাকিস্তান। এমনকি বিভিন্ন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্ররোচনা দিয়েছে এবং দিয়ে চলেছে, আর সেই আবহেই যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে ভারতে।
'মক ড্রিল' কী? কেন করা হয় 'মক ড্রিল' ?
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত অর্থাৎ সামরিক মহড়ার কাজ শেষ আর এবার আগামীকাল ৭ই মে বুধবার হবে অসামরিক মহড়া। অর্থাৎ ভারতবাসী যুদ্ধ কালীন সময়ে কি করবে আর কি করবে না - সেই বিষয়ে মহড়া চলবে আগামীকাল অর্থাৎ আগামীকালই হবে অসামরিক মহড়া বা 'মক ড্রিল'। আগামীকাল দেশের মোট 259 টি জায়গায় 'মক ড্রিল' অর্থাৎ যুদ্ধের জন্য অসামরিক মহড়া চলবে। এই মক ড্রিল এর মাধ্যমেই জানানো হবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কি করা উচিত? আর কি করা উচিত নয়, অর্থাৎ সাধারণ মানুষকে যুদ্ধকালীন সময়ের জন্য সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে।
৭ই মে দেশ জুড়ে চলবে অসামরিক মহড়া বা 'মক ড্রিল'
দেশবাসীকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য তাঁদের সচেতনতার পাঠ দিতে আগামীকাল সারা দেশ জুড়ে চলবে অসামরিক মহড়া বা 'মক ড্রিল'। দেশের মোট 269 টি জায়গায় চলবে এই মহড়া। ভারত সরকার দেশবাসীর প্রতিরক্ষার জন্য মোট ২৫৯ টি জায়গায় মগ ড্রিল পরিচালনার জন্য অবিলম্বে নির্দেশ দিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম সারা দেশ জুড়ে অসামরিক মহড়ার জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
'ক্র্যাশ ব্ল্যাক আউট' কী? কেন করা হয় 'ক্র্যাশ ব্ল্যাক আউট'?
অসামরিক মহড়া চলাকালীন সময়ে 'ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট' ব্যবস্থারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে। এবং দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসলে শত্রু দেশের বিমান চালকদের বিভ্রান্ত করার জন্য ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট করা হয় অর্থাৎ এটি একটি রণকৌশল। যুদ্ধকালীন সময়ে যদি শত্রুপক্ষ রাত্রিবেলায় হামলা চালায়, তখন সেই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। আর আলো নিভিয়ে দিয়ে শত্রু দেশের বিমান চালক তথা বিমান বাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের পর 2025 সালের মক ড্রিল' সবথেকে বড় মক ড্রিল। এই মক ড্রিল চলার সময় ব্ল্যাকআউট হবে, এবং সাইরেন বাজানো হবে। আসলে সাইরেন বাজিয়ে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হবে।
যুদ্ধের জন্য ভারতীয় সেনার সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীকেও প্রস্তুত করছে ভারত সরকার
পেহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভারত সরকার সবদিক থেকে প্রস্তুত একথা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ভারত সরকারের তরফ থেকে। আর পেহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই এবং দেশের মানুষকে সুনিশ্চিত নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই আগামীকাল ৭ই মে দেশের 259 জায়গায় মক ড্রিল অর্থাৎ অসামরিক মহড়া এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনার সামরিক মহড়া শেষ, যুদ্ধের জন্য ভারতীয় সেনারা সবদিক থেকে প্রস্তুত।
পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় চলবে অসামরিক মহড়া
দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির মত পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় মগ ড্রিল হবে। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার, মালদা, শিলিগুঁড়ি, কলকাতা, হলদিয়া, দুর্গাপুর, আসানসোল, ফারাক্কা, চিত্তরঞ্জন, আলিপুরদুয়ার, ইসলামপুর, দিনহাটা, বালুরঘাট, মাথাভাঙ্গা, কোলাঘাট, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম ও পূর্ব মেদনীপুর, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় মক ড্রিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মক ড্রিল এর সময় আমাদের করণীয় কি?
৭ই মে, বুধবার মক ড্রিল অর্থাৎ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার মহড়া বা অসামরিক মহড়া চলবে। এই মহড়া কোনো জরুরী পরিস্থিতিতে করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন। মক ড্রিল এর সময় সাধারণ মানুষের করণীয় কাজ গুলি হল -
১) সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে এবং অন্যকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণে সাহায্য করতে হবে।
২) এই মহড়া চলাকালীন সময়ে যেকোনো নিরাপত্তা মূলক নির্দেশ কর্তব্যের সঙ্গে পালন করতে হবে।
৩) মক ড্রিল চলাকালীন সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের সমস্ত খবর সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে হবে।
৪) মক ড্রিলের সময় আতঙ্কিত হবেন না এবং আতঙ্ক ছড়াবেন না। এই সময় শান্ত থাকুন।
৫) এই সময়ে কোন জরুরী জায়গায় অতিরিক্ত ভিড় বাড়াবেন না এবং নিরাপত্তা কর্মীদের নিরাপত্তা মূলক কাজে বাধা দেবেন না।

Comments