Tripura
জরুরি অবস্থা ছিল সংবিধান ও গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আক্রমণ: বললেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী
জরুরি অবস্থা ছিল সংবিধান ও গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আক্রমণ: বললেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী! জরুরি অবস্থা সম্পর্কে আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়! বললেন পর্যটন মন্ত্রী!

ত্রিপুরা, বিক্রম কর্মকার । ১লা জুলাই ২০২৫ । আজ আগরতলা মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি মহিলা মোর্চার উদ্যোগে জরুরি অবস্থার কালো দিন নিয়ে আয়োজিত মক পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বললেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত জরুরি অবস্থা ছিল একটি কালো অধ্যায়। আজ এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীরা ইতিহাস সম্পর্কে জানবেন এবং এবিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। আমরা অনেক কিছুই ভুলে যায়। বিশেষ করে দুঃখের দিনগুলি। আর সবাই জানেন যে ভারতবর্ষের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা আরোপ করেছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং ১০ মার্চ যখন ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন তিনি জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রাজ নারায়ণ এই ফলাফল মেনে নিতে পারেননি এবং এলাহাবাদ হাইকোর্টে এবিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। সবাই এবিষয়গুলি জানেন। রাজ নারায়ণ বলেছেন যে সরকারের সহায়তায় এবং একজন গেজেটেড অফিসারকে নিয়োগ করে এই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ত্রিপুরার পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বললেন, এই দুই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিচারপতি জগমোহন লাল সিনহা ১৯৭২ সালের ১২ জুন এই নির্বাচনকে বাতিল বলে ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তদানীন্তন প্রয়াত ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সুপ্রিম কোর্টের দরজায় কড়া নাড়েন এবং সেখানে বিচারপতি কৃষ্ণা আইয়ার বলেছিলেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন, তবে ভোট দেওয়া কিংবা কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। পরে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়কে তলব করা হয়েছিল। যিনি একজন খ্যাতনামা ব্যারিস্টার ছিলেন এবং ইন্দিরা গান্ধী তাঁর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তারপরে রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদের উপর চাপ সৃষ্টি করে ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল, যা একটি কালো দিন হয়ে থাকবে।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়িকা মিমি মজুমদার বললেন, আগামী প্রজন্মকে এই কালো দিন সম্পর্কে অবগত করার জন্য এবং এবিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য মক পার্লামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। এখান থেকে অবগত হয়ে পরে তারা এসম্পর্কে মানুষের কাছে বিষয়টি পৌঁছে দেবে। জরুরি অবস্থার ঘোষণা ভারতীয় সংবিধানের উপর সরাসরি আক্রমণ ছিল। কংগ্রেস শাসনের সময় গণতন্ত্রকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল সেটা আমরা দেখেছি। ত্রিপুরায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুখাময় সেনগুপ্ত। আমরা দেখেছি যে তারা কীভাবে মেইনটেনেন্স অফ ইন্টারন্যাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এর ব্যবহার করে সাংবাদিক থেকে শুরু করে বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করেছিল। আমরা দেখেছি কি পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল তখন। অনেক বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছিল। জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেছিলেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সংবাদ মাধ্যমকে নিশানা করা হয়েছিল। আর এখন আমরা প্রকৃত উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছি। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংবিধান রক্ষার জন্য কাজ করছেন।

Comments