Hooghly - Kali Puja

৭০ বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী 'সবুজ কালী'র পুজো

৭০ বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী 'সবুজ কালী'র পুজো, যা দেখতে ভিড় জমান অনেক পূর্ণার্থী। আপনিও আসবেন নাকি এ বছরের 'সবুজ কালী'র পূজায়?

কালী পুজোয় আমরা কালী ঠাকুরের গায়ের রং কালো এবং নীল (শ্যামা) দেখতে অভ্যস্ত। তবে আপনি জানলে চমকে যাবেন, হুগলির হরিপালে অধিকারী পরিবারে যে কালী ঠাকুর পূজিতা হন তাঁর গায়ের রং নীল অথবা কালো নয়, দেবীর গায়ের রং সবুজ। আর এই কালীপুজো খুব ধুমধাম করে সত্তর বছর ধরে তার ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছে। ৭০ বছর ধরে 'সবুজ কালী'র পুজো হচ্ছে হুগলির হরিপাল থানার অন্তর্গত শ্রীপতিপুর গ্রামে। 

ঐতিহ্যবাহী এবং ব্যতিক্রমী 'সবুজ কালী'র পুজো

শ্রীপতিপুরের গ্রামের অধিকারী পরিবারের দেবী সবুজ কালী, যা অন্যান্য কালীপুজোর থেকে আলাদা। এই পুজো শুধু দেবীর গায়ের রঙের জন্য আলাদা নয়, তা অনেক দিক থেকেই আলাদা। জনসাধারণের মধ্যে বিশ্বাস আছে যে ভূত চতুর্দশী রাতে এই দেবীর কাছে অর্থাৎ সবুজ কালীর কাছে ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে যদি  কোন মানত করা হয়, তাহলে তা দেবী সবুজ কালী সেই ইচ্ছা পূরণ করেন আর সেই কারণেই এই সবুজ কালীর পুজোতে বহু পুন্যার্থীর সমাগম দেখা যায়। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা সবুজ কালীর পুজো দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভিড় জমান হরিপালের অধিকারী পরিবারের পুজোতে। 

দীপান্বিতা অমাবস্যায় ষোড়শো উপচারে দেবী সবুজ কালীর পুজো হয়, তার সঙ্গে সঙ্গে পুজোর শেষে হয় হোম যজ্ঞ। এই সবুজ কালীর পুজোতে ভোগ দেয়ার পদ্ধতি এবং পুজো পদ্ধতির মধ্যেও রয়েছে ব্যতিক্রমী ছোঁয়া। এই সবুজ কালীর পুজোয় ভোগ হিসেবে ইলিশ মাছের পদ অবশ্যই রাখা হয়। 

বৈষ্ণব পরিবারে প্রতিষ্ঠিত সবুজ কালী

কোনো বৈষ্ণব পরিবারে কালীপুজো সাধারণত হয় না, তবে ব্যতিক্রমী হল এই অধিকারী পরিবার। স্বপ্নাদেশ পেয়ে অধিকারী পরিবারের, বটকৃষ্ণ অধিকারী সবুজ কালীর প্রতিষ্ঠা করেন। তবে এই কালীপূজায় হয় না কোন বলি অর্থাৎ পশু হত্যা। এখানে ভোগ হিসেবে অবশ্যই দেওয়া হয় ইলিশ মাছ আর এই সবুজ কালীর প্রিয় ফুল হলো জুঁই ফুল, তাই জুঁই ফুল ছাড়া সবুজ কালীর পুজো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। অর্থাৎ প্রসাদ হিসেবে ইলিশ মাছ এবং সবুজ কালীর প্রিয় ফুল হিসেবে জুঁইফুল অতি অবশ্যই প্রয়োজন এই পুজোয়।