Football
পায়ের জাদুতে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে হাবড়ার উঠতি স্ট্রাইকার সাহিল মহাজন
কলকাতা ময়দানে সাড়া জাগিয়েছে ইউনাইটেড স্পোর্টস জুনিয়র টিমের ১৯ বৎসরের ফুটবলার গরিব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের চৌকস দুরন্ত নির্ভীক সাহিল হরিজন

বিদ্যুৎ ভৌমিক । ১লা জুলাই ২০২৫ । বর্তমানে কলকাতা ময়দানে কিছু নতুন সম্ভাবনাময় ফুটবলার উঠে আসছে যারা স্বীয় ক্রীড়াচাতুর্যের গুণে মাঠ কাঁপাচ্ছে। বল কন্ট্রোল থেকে শুরু করে ড্রিবলিংয়ে অদ্ভুত দক্ষতার পরিচয় দিয়ে চোখের নিমেষে তিন- চারজনকে অবলীলাক্রমে কাটিয়ে ক্রশবারের কোণ ঘেঁষে বল জালে জড়িয়ে দিচ্ছে। তেকাঠি চিনতে তাদের ভুল হয় না । এমনই চোখধাঁধানো গোল করতে পারলে যে কোন স্ট্রাইকার নিজেকে গর্ববোধ করতে দ্বিধা করে না । এমনই অনায়াস দক্ষতাকে সম্বল করে কলকাতা ময়দানে সাড়া জাগিয়েছে ইউনাইটেড স্পোর্টস জুনিয়র টিমের ১৯ বৎসরের ফুটবলার গরিব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের চৌকস দুরন্ত নির্ভীক সাহিল হরিজন।
সূত্র মারফৎ জানা যায় যে, উত্তর ২৪ পরগণা জেলার হাবড়া হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বসতবাড়ি সাহিলদের । তার বাবা অজয় হরিজন হাবড়া পৌরসভায় অ্যাম্বুল্যান্স চালিয়ে দিন গুজরান করেন ।কিন্তু তিনি ফুটবলকে অসম্ভব ধরনের ভালোবাসেন । কলকাতা ময়দানের সাড়া ফেলে দেওয়া স্ট্রাইকার হাবড়ার ফুটবলার অসীম বিশ্বাসের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে ফুটবল জগতে পা রেখেছে সাহিল।একটা সময় কলকাতা লিগে পাঠচক্রের হয়ে খেলতে নেমে একটা দুর্দান্ত ব্যাক ভলিতে চমকপ্রদ গোল করে সাহিল নজর কাড়ে । তারপর সেকেন্ড ডিভিশনের আই লিগের খেলায় ইউনাইটেড স্পোর্টস দলে প্রতিনিধিত্ব করে ১১টি গোল করে প্রতিযোগিতায় যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতার শিরোপা লাভ করে । ঐ প্রতিযোগিতায় তার পায়ের গোড়ালিতে চোট লাগে ।ফলে খেলার মাঠ থেকে সরে আসতে হয়।অবশেষে অপারেশনের পর মাঠে নামতে সাহিলের ছ' মাস লাগে । এবারে কলকাতা লিগে ইউনাইটেড স্পোর্টস দলে প্রতিনিধিত্ব করে ক্রীড়াদক্ষতায় সাহিল জানান দিয়েছে যে, কেন তাকে নিয়ে বাংলার ক্রীড়ামোদী আমজনতা স্বপ্নের জাল বুনছে ? তাকে নিয়ে এত গর্ব কেন ক্রীড়ারসিকদের?
ইউনাইটেড স্পোর্টস দলের সর্বময় কর্তা নবাব ভট্টাচার্য সাহিল সম্পর্কে জানান যে, আমি ওকে প্রথম দিনই বলেছিলাম, খেপের মাঠ থেকে দূরে থাক্ ।অনেক দূর যাবি। ও আমার কথা রেখেছে।তবে আমার আক্ষেপ অন্য জায়গায় ।অনূর্ধ্ব ২৩ জাতীয় দলের ক্যাম্পে সাহিলকে ডাকার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিলাম ।কিন্তু ডাক পাওয়ার জন্য যদি শুধু আইএসএল ক্লাবের যুব দলে খেলতে হয়, তাহলে সেটা লজ্জার।নিজের সম্মন্ধে সাহিলের বক্তব্য : বাবা ও মা শুরু থেকেই পাশে ছিল।তাই ডাল ভাত খেয়ে থেকেছি , কিন্তু কখনও খেপ খেলিনি ।একটাই স্বপ্ন দেখি রোজ।বড় দলে খেলতে হবে , জাতীয় দলে খেলতে হবে ।গত বছর চোটের জন্য লিগে খেলতে পারিনি।খুব কষ্ট হত, মনখারাপ হত। তবে জেদ ছিল ফিরতেই হবে ।কলকাতা মাঠের ক্রীড়া পাগল মানুষজন গরিবঘর থেকে উঠে আসা সাহিল হরিজনের আগামী দিনগুলোতে তার ক্রীড়া সাফল্য দেখার প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন ।

Comments