Israel vs Iran war

পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ দুই দেশ, সংঘাতের আবহে ইতিবাচক দাবি ট্রাম্পের

সোমবার গভীর রাতে ইজ়রায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির বার্তা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমাজমাধ্যমে জানান, “ইরান ও ইজ়রায়েল— দুই দেশই সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছেন। আগামী ৬ ঘণ্টার মধ‍্যে সংঘর্ষবিরতি শুরু হবে। তেহরান জানায়, সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত কোনও সমঝোতা হয়নি

সঞ্জনা সমাদ্দার, ২৫ শে জুন ২০২৫: সোমবার গভীর রাতে ইজ়রায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির বার্তা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমাজমাধ্যমে জানান, “ইরান ও ইজ়রায়েল— দুই দেশই সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছেন। আগামী ৬ ঘণ্টার মধ‍্যে সংঘর্ষবিরতি শুরু হবে। তেহরান জানায়, সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত কোনও সমঝোতা হয়নি। এরই মধ্যে, ইরান-ইদেশজ়রায়েল সংঘাতের আবহে ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, পরমাণু চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনার টেবিলে ফিরতে পারেন আমেরিকা এবং ইরান। অর্থাৎ, দুই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার পরেও পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের- র নেপথ্যে সঠিক কারণগুলি নির্নয় করার চেষ্টা করব- 

NPT- র লক্ষ্য পূরনে অসহযোগিতা প্রকাশ দেশগুলির

পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্য অর্জনের আশায় বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার মূলধন হল পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তি ( NPT)।দেখা যায়,২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA) নামের চুক্তিটি মূলত ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে দেশটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য করা হয়েছিল। অর্থাৎ, পারমানবি চুক্তি দেশের নিরাপত্তা রক্ষার্থে না করে একটি দেশ আরেকটি দেশের ক্ষমতা খর্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে এই চুক্তি অনিশ্চয়তার রূপরেখা গঠন করছে ।

পারমাণবিক চুক্তি -র বাঁধন থেকে ইরানের বিচ্যুতিকরণ

পারমাণবিক চুক্তি -র বাঁধন থেকে ইরানের বিচ্যুতিকরণ ঘটলে ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বৃদ্ধি করতে পারে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ভান্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করবে।অর্থাৎ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, যে এটি বিশ্বব্যাপী শান্তি এবং আন্তর্জাতিক চুক্তির উপর আস্থাকে নড়বড়ে করবে। যার ফলে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা (IAEA) ইরানের কর্মসূচির উপর নজর রাখার ক্ষমতা হারাবে।

ইসরায়েলের অস্ত্রমুখী কার্যকলাপে ক্ষুণ্ণ মত প্রকাশ ইরানের

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাঘাঈ বলেন, 'এই অঞ্চলে একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হলো ইসরায়েল। অথচ তারাই ইরানের বিরুদ্ধে পারমানাবিক অস্ত্র নির্মাণের অভিযোগ তুলছে। অর্থাৎ, কূটনৈতিক মতাদর্শকে কাজে লাগিয়ে দেশ দখলে আশাবাদী হচ্ছে ইসরায়েল। এমনটা দাবি করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি । 

আইএইএ (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা)-র চাঞ্চল্যকর তথ্য

রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইরান প্রায় ২৭৫ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরির কাজে সফল হয়েছে। এর আগে গত নভেম্বরের  তেহরানের হাতে সাড়ে ৯২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। অর্থাৎ, বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ইরানের ২০ শতাংশের বেশি পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনে ছাড় দেওয়া হয়, আইএইএ-কে অবশ্য ইরান জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হচ্ছে। সাধারণ ভাবে পরমাণু বোমা তৈরি করতে গেলে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। তবে ৪২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে কম ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা বানানো সম্ভ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যৎ বর্তমানে অনিশ্চিত, কারণ বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এটিকে দেখছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তারা চায় যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত থাকুক।

Advertisement