Pakistani Spy
ISI এর কাছে পাচার করতো দেশের গোপন তথ্য, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার এক মহিলা ইউটিউবার সহ ৬
দেশের গোপন তথ্য ISI এর কাছে মোটা টাকার বিনিময়ে পাচার করত হরিয়ানার এক মহিলা ইউটিউবার। এছাড়া একাধিক পাক গুপ্তচরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ওই মহিলার।
দেশ বিরোধী কাজ এবং দেশের গোপন তথ্য পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের কাছে পাচার করার অভিযোগে গ্রেপ্তার এক মহিলা ইউটিউবার, যিনি ভ্রমণ বিষয়ে ইউটিউবে কনটেন্ট ক্রিয়েট করতেন, যার ইউটিউব চ্যানেলের নাম "ট্রাভেল উইথ জো"। ওই মহিলা ইউটিউবার এর নাম জ্যোতি মালহোত্রা, যিনি পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্টের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং ভারতের গোপন তথ্য তিনি পাক গুপ্তচর সংস্থার কাছে মোটা টাকার বিনিময়ে পাচার করতেন।
মোটা টাকার বিনিময়ে সীমান্তের ওপারে পাচার হতো গোপন তথ্য
পাকিস্তানের কাছে ভারতের গোপন তথ্য পৌঁছে দিত এই দেশেরই বেশ কিছু 'বেইমান মানুষ', যারা পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচর বৃত্তি করত। পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির সেই জাল দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে, তবে 'অপারেশন সিঁদুর' এর পর একে একে সেই তথ্য সামনে আসছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে। ভারতীয় গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন - হরিয়ানার এক মহিলা ইউটিউবার পাকিস্তানের কাছে গোপন তথ্য পাচার করত, সেই মহিলা ইউটিউবার সহ সন্দেহভাজন মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করতো এবং ভারতীয় গোপন তথ্য পাচার করত সীমান্তের ওপারে এবং তার বিনিময়ে আয় করতো মোটা অঙ্কের টাকা।
ISI এজেন্টের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন মহিলা ইউটিউবার
তদন্তে নেমে অফিসাররা জানতে পেরেছেন, হরিয়ানার মহিলা ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা দেশের গোপন তথ্য, পাক গুপ্তচর সংস্থার কাছে পাচার করতো। দেশবিরোধী কাজ এবং আই এস আই এর সঙ্গে মহিলা ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রার কতটা যোগাযোগ ছিল তদন্তকারী অফিসাররা তা খতিয়ে দেখেছেন। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে যে - জ্যোতি মালহোত্রা হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট, টেলিগ্রাম ইত্যাদি বিভিন্ন সমাজ মাধ্যমের সাহায্যেই পাক গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং তাঁর সঙ্গে এক পাক গুপ্তচর এজেন্টের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যা বিয়ের প্রতিশ্রুতি পর্যন্ত পৌঁছায়।
দানিশের সাহায্যেই জ্যোতি পাকিস্তান যাওয়ার ভিসা পায়
পাকচর হিসেবে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে অভিযুক্ত মহিলা ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে। ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা হরিয়ানার বাসিন্দা, যিনি পেশায় একজন ইউটিউব ব্লগার। জ্যোতি মালহোত্রা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইউটিউবার হিসেবে বেশ সক্রিয় ছিলেন। তিনি ভ্রমণ সংক্রান্ত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ছিলেন। অভিযুক্ত জ্যোতি মালহোত্রার সঙ্গে দিল্লির পাক হাইকমিশনের একজন সদস্য এহসান উর রহিম (দানিশ) এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল এবং তাঁরই উদ্যোগে জ্যোতি মালহোত্রা ২০২৩ সালে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ এহসান উর রহিম এর সাহায্যেই জ্যোতি পাকিস্তান যাওয়ার ভিসা পেয়েছিল।
একাধিক পাক এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল জ্যোতির
তদন্তে নেমে, তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন যে অভিযুক্ত জ্যোতি মালহোত্রা মোট তিনবার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। এমনকি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলে পাকিস্তান ভ্রমণের বেশ কিছু ভিডিও তিনি শেয়ার করেছেন। শুধু তাই নয় এহসান উর রহিম ছাড়াও পাক গুপ্তচর সংস্থার আরোও বেশ কিছু সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল জ্যোতি মালহোত্রার। অভিযুক্ত ইউটিউবার পাক এজেন্টদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে যোগাযোগ রাখত। জ্যোতি মালহোত্রার ফোন থেকে এক পাক এজেন্ট এর নাম্বার পেয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা, সেই এজেন্ট এর নম্বর 'জাঠ রানধাওয়া' নামে সেভ করা ছিল জ্যোতি মালহোত্রার ফোনে। এছাড়া আলী আহসান নামেও এক পাক গুপ্তচরের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল জ্যোতি মালহোত্রার।
পাকিস্তান যাওয়ার ভিসা ঠিক করে দিত দানিশ
হরিয়ানার বাসিন্দা জ্যোতি মালহোত্রা ছাড়াও পাঞ্জাবের বাসিন্দা বত্রিশ বছর বয়সী এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী অফিসাররা। পাঞ্জাব থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ওই মহিলার নাম গুজালা। গুজালা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানে গিয়েছিল, যাকে ভিসা পাইয়ে দিয়েছিল এহসান উর রহিম ওরফে দানিশ। পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর গুজালা তার আরোও দুই বন্ধুকে (বানু নাসরিনা ও অন্য এক মহিলা) পাক হাই কমিশনের অফিসে নিয়ে যায়। পরে তাদেরকেও পাকিস্তান যাওয়ার ভিসা ঠিক করে দেয় দানিশ।
ISI এর সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্তদের পরিচয়
পাক গুপ্তচর সংস্থাকে দেশের গোপন তথ্য পাচার করার অভিযোগে মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী অফিসাররা, যাদের সঙ্গে পাকিস্তানি এজেন্টের যোগাযোগ ছিল এবং তাঁদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন হয়েছে বহুবার। গ্রেপ্তার হওয়ার ৬ জন পাঞ্জাব ও হরিয়ানা বাসিন্দা। হরিয়ানার জ্যোতি মালহোত্রার সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন পাঞ্জাবের বাসিন্দা গুজালা, যিনি পাকিস্তানের এজেন্ট দানিশ এর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে জড়িত ছিলেন। এছাড়া রয়েছেন পাঞ্জাবের মালেরকোটলার বাসিন্দা ইয়ামিন মহম্মদ, হরিয়ানার কৈথালের দেবিন্দর সিং ধিলন এবং হরিয়ানার নুহ থেকে এক বাসিন্দা আরমান, যিনি পাকিস্তানি এজেন্ট এর কথা মত ভারতীয় সিম কার্ড সরবরাহ করতো।

Comments