Anubrata Mandal

কেষ্টর অকথ্য আক্রমনে বাংলার প্রশাসন!

মা বোনেদের সিঁথির সিঁদুর ফেরাতে মরিয়া ভারতবর্ষ ঠিক সেই সময়ই বাংলায় এক ইন্সপেক্টরের মা- বোনকে অশ্লীল ভাষায় অপমান করা হল ।

আমরা জনগণের সেবক , রাজনীতিবিদদের গলায় এই সুর বাঁধা । কিন্তু বাস্তব সমাজে চিত্রটি কি অপ্রত্যক্ষ! আর সেই সেবকের সেবা জনগনের কাছে পৌঁছে দেন সরকারি প্রশাসন , যাকে আমরা আমলাতন্ত্র বলে অভিহিত করি । আজ সেই প্রশাসনকেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুনতে হল জনগনের সেবক তথা শাসকদলের কোর কমিটির অন্যতম সদস্য 'বীরভূমের বাঘ' অনুব্রত মন্ডলের গাম্ভীর্য গলায় ।রাজনীতির অকপটে ' জিন্দাবাজ ' আর ' নিন্দাবাদের' অবস্থান খুব কাছাকাছি হলেও নিজের দাম্ভির্য , রাজনৈতিক উচ্চপদঅধীনস্ত পদ কে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের প্রশাসন তথা নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখার কারিগরের উদ্দেশ্যে অনুব্রতের কর্দয্য মন্তব্য আমাদের আমলাতন্ত্রের উপর কতটা সম্মানহানি করেছে তা বলার আর লক্ষ্যমাত্রা রইল না ।

কেষ্ট - র গালিতে কাঁপল প্রশাসন

বীরভূম জেলার তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বোলপুর থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ (আইসি)-কে হুমকি দিয়ে অশ্রাব্য গালাগালি করার অভিযোগ তুলে একটি অডিও ক্লিপ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এই অডিও শোনা যায় অনুব্রত আইসির বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন। এমনকী তার পরিবারের ক্ষতি করার হুমকিও দিচ্ছেন। তিনি আইসিকে স্টেশন থেকে টেনে বের করে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার হুমকি দিয়েছেন। যদিও এক সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুব্রত সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অনুব্রত বলেছেন, বোলপুরের আইসি লোককে হুমকি দিচ্ছেন এবং টাকা চাইছেন। এমনকী তিনি বিভিন্ন ঘটনায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে টাকাও নিচ্ছেন এবং তাদের ছেড়ে দিচ্ছেন। আমি ডিজিপি রাজীব কুমার থেকে শুরু করে এসপি পর্যন্ত সকলকে ফোন করে তার অপসারণের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

নীরব 'পুলিশ প্রশাসন'

সম্প্রতি, হুমকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা পুলিশ অনুব্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। পুলিশকে হুমকি দেওয়ার জন্য ৭৫, ১৩২, ২২৪ এবং ৩৫১ বিএনএস সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করেছে প্রশাসন। প্রশ্ন রইল , অকথ্য ভাষায় প্রশাসনকে গালিগালাজ সহ পারিবারিক আক্রমণের সম্মুখীন হতে হলেও শাসকদলের নির্ধারিত সময়বিধি ধার্য না হলে প্রশাসন কি দোষীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বদ্ধপরিকর হবে না । তাহলে কি বলা যেতে পারে শাসক দলের ব্যাক্তিত্বের করা অপরাধকে ক্রাইম বলে মান্যতা দিতে প্রশাসনের সময় লাগে ।

বাংলার মা- বোনেদের সম্মানহানি

একদিকে যখন পহেলগাও ঘটনাকে কেন্দ্র করে মা বোনেদের সিঁথির সিঁদুর ফেরাতে মরিয়া ভারতবর্ষ ঠিক সেই সময়ই বাংলায় এক ইন্সপেক্টরের মা- বোনকে অশ্লীল ভাষায় অপমান করা হল । আর সেই অপমান করল বাংলার শাসকদলের অধীনস্ত সুপরিচিত দলীয় কোর কমিটির সদস্য। ভারতবর্ষ যখন অন্ধকার সমাজের গন্ডি পেরিয়ে দেশের সামরিক শয্যার প্রথম সারিতে মহিলাকে স্থান করে দেওয়া হচ্ছে , সেই সময়ের সন্ধিক্ষনেই বাংলার মা - বোনের ওপর হওয়া অশ্লীল মন্তব্য , অসম্মান কি বাংলার মা -বোনেদের সম্মান রক্ষার্থে ঠিক কতটা তৎপর হবে তা বলা বাহুল্য ।

Advertisement