TET Scam

চাকরি মাত্র ৮ লাখে!!! শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় সাদা খাতার ম্যাজিক!!

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ৭৮ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে তোলা হয়।

পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীরা সব সময় চেষ্টা করে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে খাতা ভরিয়ে আসার। কিন্তু সাদা খাতার ম্যাজিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়। অর্থাৎ পরীক্ষায় পাশ করার জন্য সাদা খাতাই যথেষ্ট। আর সেই সাদা খাতা দেখাচ্ছে ম্যাজিক। তবে সেই ম্যাজিক তখনই হবে যখন মোটা অংকের টাকার বিনিময় হবে। সেই টাকা কে নিতো? কিভাবে নিত? কিভাবে তা হাত বদল হতো? সবকিছুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে। 

কাকুর কাছ থেকে পাওয়া গেছে ১০ টি ডাইরি

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, কালীঘাটের কাকুর কাছ থেকে অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে মোট দশটি ডায়েরী। আর সেই সমস্ত ডায়েরিতে পাওয়া গিয়েছে বিস্ফোরক তথ্য। আর সেই সমস্ত তথ্য নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

চাকরি পাওয়ার অভিনব উপায়

চাকরি পাওয়ার অভিনব উপায় হল সাদা খাতা। যে খাতায় একটিও আঁচড় বা দাগ কাটা যাবে না, পুরোপুরি সাদা ধবধবে খাতা জমা দিতে হবে চাকরি প্রার্থীদের। আর সেই চাকরি প্রার্থীরাই আগাম বোঝাপড়ার ভিত্তিতে চাকরির পরীক্ষায় পাশ করবেন এবং চাকরি পাবেন।

ডাইরি থেকে মিলেছে বিস্ফোরক তথ্য 

সাদা খাতা জমা দিয়ে এবং অন্য হাতে মোটা অংকের টাকা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার এক অভিনব উপায়। মোটা অংকের টাকা এবং ধবধবে সাদা খাতার বিনিময়ে মিলতো চাকরি। যারা টাকা দিয়েছে তারাই চাকরি পেয়েছে এমন বিষয়ও কিন্তু নয়। তবে সিবিআই এর হাতে যে দশটি ডায়েরী এসেছে তাতে রয়েছে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার বিস্ফোরক সব তথ্য। 

ডাইরি গুলিতে আছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য 

যে দশটি ডায়েরী পাওয়া গেছে সেই ডাইরিতে রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যেখানে ঘুষের টাকা কার কাছ থেকে কত নেওয়া হয়েছে এবং তা কাকে কাকে দেওয়া হয়েছে এবং কতটা পরিমাণ দেওয়া হয়েছে - সেই সমস্ত তথ্যই রয়েছে। শুধু তাই নয় কোন্ এজেন্ট কিভাবে কার মাধ্যমে টাকা তোলা হয়েছে সেই সব তথ্যও রয়েছে।

টাকা তোলা হতো এজেন্ট এর মাধ্যমে

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই দশটি ডায়েরির তথ্য তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যেখানে কলকাতার কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ঘুষের টাকা কোন এজেন্টের মাধ্যমে কার কাছ থেকে নিয়েছে এবং কার কাছে সেই টাকা গিয়েছে সেই সমস্ত তথ্য রয়েছে। যে তথ্য পাওয়া গেছে সেখানে মোট চারজন এজেন্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

মোটা অংকের টাকা হাত বদল হতো 

কলকাতার কাকুর কাছে টাকা আসার আগে সেটি অন্য এক ব্যক্তির হাত বদল হত এবং সেই ব্যক্তি সিগনেচার করে অর্থাৎ প্রাপ্তি স্বীকার করেই তবেই সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র অর্থাৎ কালীঘাটের কাকুর হাতের সেই টাকা দিত। আরও জানা গিয়েছে - মোট তিন জায়গা থেকে মোটা অংকের টাকার হাত বদল হত। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে এজেন্ট মারফত টাকা তোলা হত। তারপর সেই চাকরিপ্রার্থীদের পুরো সাদা খাতা জমা দেওয়ার কথা বলা হত। এজেন্টরা চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা তুলে সেই টাকা কাকুর কাছে দিতেন। 

চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ৭৮ কোটি টাকার ঘুষ

ডায়েরি থেকে আরও জানা যায় চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোট 78 কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে তোলা হয়েছিল চারটে এজেন্টের মারফত। এবং ওই চারজন এজেন্ট স্বীকার করে নিয়েছেন যে তারা টাকা তুলেছেন। তবে যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল তারা যে সবাই চাকরি পেয়েছে এমন কিন্তু নয়, তবে যারা পাননি তাদের অনেককেই কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র কিছু কিছু টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement