বন্যা

ঘাটাল, হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়ার একাধিক এলাকা জলমগ্ন, আমন ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা, ৫ ই আগস্ট পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী

দক্ষিণ বঙ্গে অতি অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে জুলাই মাসে তার ফলে জনজীবনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে দক্ষিনবঙ্গের বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন

সঞ্জয় কুমার দোলুই। হুগলি ৪ঠা আগস্ট । এবছর মৌসুমি বায়ু আপন বেগে চলছে, বরুণ দেব তার বারিধারা বর্ষন করে চলছে। রিমঝিম বৃষ্টিতে বাংলাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। কলকাতা শহরতলি থেকে বাংলার গ্রামে গ্রামে  জলযন্ত্রণা অব্যাহত। ১৮ ই জুন থেকে শুরু হয়েছে বাংলায় এক নাগাড়ে বৃষ্টি। সমগ্র জুলাই মাস ধরে অতিবৃষ্টি বাংলা জুড়ে। আর দক্ষিণ বঙ্গে অতি অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে জুলাই মাসে তার ফলে জনজীবনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে দক্ষিনবঙ্গের বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন, বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের একাধিক গ্রাম জলমগ্ন, বীরভূমের কোপাই নদীর জল বেড়ে কংকালিতলা মন্দির চত্বর ডুবে গেল হাঁটু জলে। পশ্চিম মেদিনীপুর এর গড়বেতা এবং ঘাটাল এলাকায় একাধিক এলাকায় জলমগ্ন। নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘাটাল মাস্টার প্লান নিয়ে কটাক্ষ বিরোধীদের। ঘাটাল এই বর্ষার মরসুমে দুবার বন্যায় কবলিত হলো। ঘাটালবাসীর দূর্দশা শেষ নেই। ঘাটাল মাস্টার প্লান এর আশায় তারা বুক বেঁধে আছে। 

অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে হুগলি জেলার আরামবাগ, খানাকুল এবং পুরশুড়া বিধান সভার একাধিক অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আমন ধান চাষ শেষ হয়ে গিয়েছে আবার কোথাও শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে হাজার বিঘা জমি জলমগ্ন। আমন ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি, চাষীদের মাথায় হাত। সারাবছরের খাদ্যের জোগান দিতো এই আমন ধান তা নষ্ট হয়ে গেল। সরকারি সাহায্য প্রার্থনা চাষীদের। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৫ ই আগস্ট পরিদর্শন আসবেন ঘাটাল এবং আরামবাগ খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। 

আরামবাগের ৪ টি পঞ্চায়েত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার জল ক্ষেত খামার, রাস্তা ঘাট, ডুবিয়ে দিয়েছে। কোথাও হাঁটু জল আবার কোথাও এক কোমর। স্কুল যেতে পারছে না ছাত্র ছাত্রী রা। রাজ্যসড়ক চাঁপাডাঙা থেকে আরামবাগ রোডের মায়াপুরে রোড জলমগ্ন। রাজ্যসড়ক মায়াপুর রোড ডুবে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যান চলাচল করছে। ১ লা আগস্ট পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। আরামবাগ-মায়াপুর বেশকিছু দোকান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে তার ফলে ব্যবসায়ীরা জিনিস পত্রে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। আরামবাগের বিজেপির বিধায়ক এক কোমর জলে নেমে বন্যা পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে দেখেন। 

খানাকুলের ১নং ব্লক এবং ২ নং ব্লক জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ মহাশয় বন্যা পরিস্থিতির খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে বের হন। খানাকুলের ঘোষপুর, কাকনান, রামচন্দ্র পুর, রাজহাটী, নন্দন পুর, সাবলসিংগাপুর, পানশিউলী জলের তলায়, খানাকুল, রামমোহন-১ এবং রামমোহন -২ পঞ্চায়েত জলমগ্ন। ধামলা,লাউশর, কাবিলপুর, কেটেদল, সারদা, চকজলকরের হাজার হাজার বিঘা জমি জলের তলায়। চাষীদের অবস্থা শোচনীয়। 

পুরশুড়া বিধান সভার অন্তর্গত খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের অরুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত জলমগ্ন। অরুন্ডা গ্রাম, বন্দাইপুর, দাসপুর, গড়বেড়িয়া, পার চব্বিশ পুর, ধাড়াশিমূল, চব্বিশ পুর, কাবিলপুর, চকজলকর, হাজার হাজার বিঘার আমন ধান চাষ নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে এবছর ধান উৎপাদন হ্রাস পাবে। খানাকুলে চিংড়া অঞ্চল ও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কোথাও হাঁটু জল আবার কোথাও ৪ ফুট বা ৫ ফুট জল । তবে আবহাওয়া উন্নতি হওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ লাভ করতে পারেনি। 

Advertisement