Partha Chattopadhyay

শ্বশুরের কীর্তি ফাঁস! তবে কি এবার বিপাকে পড়তে চলেছেন হেভিওয়েট শ্বশুর মশাই?

জামাই রাজসাক্ষী হয়ে অবশেষে গোপন জবানবন্দি দিলেন, যার কারণে হেভিওয়েট শ্বশুরমশাই কি বিপাকে পড়তে চলেছেন?

কথায় বলে জন-জামাই-ভাগ্না, তিন জন নয় আপনার। তবে কি এই প্রবাদ আবারও একবার সঠিক বলে প্রমাণিত হলো? জামাই হলেন প্রবাসী আর শ্বশুর মশাই হলেন হেবিওয়েট মন্ত্রী। অর্থাৎ জামাই হলেন নিউ ইয়ার্ক বাসী কল্যাণময় ভট্টাচার্য্য এবং শশুর মশাই হলেন হেভিওয়েট প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

দেশ ছাড়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর, তলব করা হয়েছিল তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যকে। কল্যাণময় ভট্টাচার্য ইডির তলবে নিউইয়র্ক থেকে এদেশে আসেন। তবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার ফলে তিনি আর এদেশ ছেড়ে নিউইয়র্কে যেতে পারেন না। কারণ বিচার প্রক্রিয়ায় তাঁর এদেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত।

রাজসাক্ষী হিসেবে গোপন জবানবন্দি কল্যাণময়ের

কল্যাণময় ভট্টাচার্য যিনি প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর জামাই, পেশায় ইনি একজন পোশাক ব্যবসায়ী, যিনি থাকেন নিউ ইয়ার্কে। শশুর মশাই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত এবং তার সঙ্গে সঙ্গে তার জামাইও এই মামলায় জড়িয়ে যান। কিন্তু জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য অনেক আগেই আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন রাজসাক্ষী হওয়ার। কল্যানময়ের সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছিল আগেই এবং তিনি আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ১৮ই মার্চ ব্যাঙ্কশাল আদালতে রাজসাক্ষী হিসেবে তাঁর গোপন জবানবন্দি দেন দ্বিতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনে। 

শ্বশুরের বিরুদ্ধে জামাইয়ের অভিযোগ কি?

সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য তাঁর গোপন জবানবন্দিতে হেভি ওয়েট শ্বশুরমশায়ের নামে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরেছেন এবং নিজের ওপর থাকা সমস্ত অভিযোগ ক্ষমা সুন্দর ভাবে দেখার আবেদন জানিয়েছেন। কল্যাণময় ভট্টাচার্য দাবি করেছেন - তিনি তাঁর হেভি ওয়েট শ্বশুরমশাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

দুর্নীতিতে কিভাবে নাম জড়িয়ে যায় কল্যাণময় এর? 

২০১৭ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায় মারা যান এবং তারপরে বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি ট্রাস্ট তৈরি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে সোহিনী চট্টোপাধ্যায় কে। সোহিনী চট্টোপাধ্যায় হলেন প্রবাসী কল্যাণময় ভট্টাচার্যের স্ত্রী। এই ট্রাস্টের নামেই পশ্চিম মেদনীপুর এর পিংলায় একটি স্কুল তৈরি হয়। যে স্কুলটি তৈরি করতে ব্যয় করা হয় ১৫ কোটি টাকা। আর এই স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে কল্যাণময় ভট্টাচার্যের দুই মামার উপর। 

নিয়োগ দুর্নীতির টাকা কিভাবে হস্তান্তর হতো ট্রাস্টের নামে?

রাজসাক্ষী কল্যাণময় ভট্টাচার্য তাঁর গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে পাওয়া টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে নগদে দেওয়া হতো। এবং সেই টাকা থেকে ওই ব্যক্তিরা নিজেদের কমিশন কেটে নিয়ে বাকি টাকা বাবলি চট্টোপাধ্যায় চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এর নামে ট্রান্সফার করে দিত অ্যাকাউন্টে। অর্থাৎ কালো টাকা কে সাদা টাকায় পরিণত করা হত। আর এই ট্রাস্ট এর নামে কেনা হয়েছে বহু জমি। যদিও এই টাকায় বা এই দুর্নীতিতে জড়ানোর কোন ইচ্ছা কল্যাণময় ভট্টাচার্যের ছিল না বলেই তিনি দাবি করেছেন। কিন্তু হেভি হয়েছে শ্বশুরমশায়ের নির্দেশেই তিনি স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন।

Advertisement