Bijnor murder
স্বামীর সরকারি চাকরি হাতাতে-ই কি স্বামীকে নৃশংস ভাবে খুন??
রেল কর্মচারী স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন!! কিন্তু কেন? স্বামীর সরকারি চাকরি হাতাতে? নাকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তৃতীয় কোন ব্যক্তির আবির্ভাব?

স্বামী সরকারি কর্মচারী। আর স্বামীর সেই চাকরি হাতানোর জন্যই স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন! ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশ এর বিজনৌরে। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও নৃশংস ঘটনা। সরকারি কর্মচারী স্বামীর চাকরি হাতানোর জন্য তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে
উত্তরপ্রদেশ এর বিজনৌরে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁর সরকারি চাকরি হাতানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাঁর-ই স্ত্রীর বিরুদ্ধে। স্বামী দীপক কুমার, একজন সরকারি রেলকর্মী (টেকনিশিয়ান) হিসেবে ভারতীয় রেলওয়েতে কর্মরত ছিলেন। আর এই রেল কর্মী দীপক কুমারকে তাঁর স্ত্রী শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিকল্পনা মাফিক খুন! অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে
রেলকর্মী দীপক কুমারের অভিযুক্ত স্ত্রী শিবানী, তাঁর স্বামীকে এমন ভাবে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন যেটিকে অনায়াসে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালানো যায়। যদিও সেই পরিকল্পনাতে বেশ কিছু ফাঁক রয়ে যায় তাই আর শেষ রক্ষা হয়নি। স্বামীকে শ্বাস রোধ করে নৃশংসভাবে খুন করার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যে।
ভাড়া বাড়িতে মৃত্যু হয় রেল কর্মী দীপক বাবুর
রেল কর্মী দীপক কুমার এবং শিবানী দেবীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং গত বছরের ১৭ ই জুন তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে যার বয়স ৬ মাস। তবে বিয়ের পর থেকে দীপক বাবুর স্ত্রী শিবানী দেবী বেশিরভাগ সময়েই বাপের বাড়িতে থাকতেন। যদিও খুনের ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে থেকে তাঁরা আদর্শ নগরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করেন। যদিও রেল কর্মী দীপক বাবু রেল কোয়াটারও পেয়েছিলেন।
দীপক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান শিবানী দেবী
গত শুক্রবার আদর্শ নগরের ভাড়া বাড়িতেই দীপক বাবুর মৃত্যু হয় বলে সূত্র অনুযায়ী জানা যায়। ঘটনার পর, শিবানী দেবী তাঁর শ্বশুরবাড়িতে (দীপক বাবুর বাড়ি তে) ফোন করে জানান যে, দীপক বাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই খবর পাওয়ার পর দীপক বাবুর ভাই হাসপাতালে যান এবং সেখানে দীপক বাবুর মৃত্যুর খবর পান।
শিবানী দেবীর বয়ানে অসঙ্গতি, অবশেষে গ্রেপ্তার
দীপকের মৃত্যুর কারণ এবং দীপক বাবুর স্ত্রী'র শিবানী দেবীর বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায় দীপকবাবুর পরিবারের সন্দেহ হয় শিবানী দেবীর উপর আর সেই সন্দেহের ভিত্তিতেই তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় দীপকবাবুর পরিবারের তরফ থেকে। দীপক বাবুর পরিবারের তরফ থেকে ময়না তদন্তের অনুরোধ করা হয় এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে যে দীপক বাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। দীপক বাবুর শ্বাস রোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। আর এর পরেই দীপক বাবুর স্ত্রী শিবানী দেবীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচৈতন্য করে খুন
অভিযুক্ত শিবানী দেবীকে গ্রেফতার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে যে দীপক বাবুর খাবারের সঙ্গে শিবানী দেবী ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন তার ফলে তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন ও তারপরেই তাকে নৃশংসভাবে শ্বাস বোধ করে খুন করা হয়। খুন করার পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্বামীর চাকরি হাতাতেই কি স্বামীকে নৃশংস খুন?
পুলিশি জেরায় শিবানী দেবী এক যুবকের কথা উল্লেখ করেন, যদিও সেই যুবক শিবানীর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান। তবে দীপক বাবুর অন্য এক আত্মীয়র সঙ্গে শিবানী দেবীর সম্পর্ক রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পারে। দীপক বাবুর মা পুলিশকে জানান যে, তাঁর বৌমা তাঁদের বাড়িতে থাকতে চাইতো না এবং তাঁর নজর ছিল দীপক বাবুর সরকারি চাকরির উপর আর সেই সেই চাকরি হাতিয়ে নিয়ে শিবানী তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করতে চেয়েছিল আর সেই কারণেই দীপকে নিশংসভাবে খুন করেছে শিবানী।
দীপক বাবুর কাকা বলেন, তাঁর ভাইপোকে শিবানী একা খুন করতে পারে না এবং তিনি অভিযোগ করেছেন এই কাজে শিবানির সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে আর শিবানী নিজেই এই খুনের কথা স্বীকার করেছে তাই যেন তার কঠিন শাস্তি হয়।
Comments