Pakistani Spy
ISI এজেন্টের সঙ্গে প্রেম! আর তারপর ...! মোহময়ী দুনিয়ায় লাস্যময়ী জ্যোতির অতীত জানলে আপনিও অবাক হবেন!
বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য জ্যোতি মালহোত্রাকে কে বা কারা অর্থ যোগাত - সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী অফিসাররা।
হরিয়ানার মেয়ে জ্যোতি মালহোত্রা। খুব সাধারণ ঘরের সাধারণ মেয়ে ছিল জ্যোতি মালহোত্রা। জ্যোতি মালহোত্রার বাবা-মা এর বিবাহ বিচ্ছেদের পর, জ্যোতি তার বাবার সঙ্গে নিউ অগ্রসেন কলোনির একটি ছোট্ট ঘরে একসঙ্গে থাকতো। জীবনের শুরুতে চাকরি করে মাত্র কুড়ি হাজার টাকা আয় করত জ্যোতি মালহোত্রা। অর্থাৎ একজন খুবই সাধারণ মেয়ে হিসেবে তাঁর জীবন শুরু করেছিল জ্যোতি মালহোত্রা।
বাবার সঙ্গে কলোনির ছোট্ট ঘরে থাকতো জ্যোতি
খুব সাধারন ঘরে সাধারণভাবে জীবনের প্রথমটা শুরু করেছিল হরিয়ানার মেয়ে জ্যোতি মালহোত্রা। বাবা-মা এর বিবাহ বিচ্ছেদের পর, বাবার সঙ্গে একটি ছোট্ট কলোনির বাড়িতে থাকতো জ্যোতি। তবে সেই অতি সাধারণ মেয়েটি এবং তাঁর সেই অতি সাধারণ ছোট্ট ঘরটাই আজকে হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক সংবাদের শিরোনাম। পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন হরিয়ানার মহিলা ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা।
"ট্রাভেল উইথ জো" এর কন্টেন তৈরির জন্য তিনবার পাকিস্তান সফর
সূত্র অনুযায়ী জানা যায় - পাক এজেন্ট দানিশের সঙ্গে জ্যোতি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন, যা বিয়ের প্রতিশ্রুতি পর্যন্ত গড়ায়। এবং নিজের ইউটিউব চ্যানেল "ট্রাভেল উইথ জো" এর ভ্রমণ মূলক কনটেন্ট তৈরি করার নেপথ্যে বা নতুন নতুন কন্টেন্ট তৈরির জন্য বহু জায়গায় বেড়াতে গিয়েছেন জ্যোতি। ইতিমধ্যেই তিনি তিনবার পাকিস্তান সফর করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, দেশের গোপন তথ্য পাক গুপ্তচর দের কাছে তিনি পাচার করতেন এবং তার বিনিময়ে তিনি মোটা টাকা ইনকাম করতেন।
হঠাৎই বদলে যায় জ্যোতির জীবন! সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টার হয়ে ওঠেন
জ্যোতি তাঁর প্রথম জীবনে ছিলেন খুবই সাধারণ, তবে তাঁর জীবন দিল্লির একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি ছাড়ার পর বদলাতে শুরু করে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে জ্যোতি "ক্রাউন অফ আইডিয়া মিস ইন্ডিয়া" নামে একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং সেখানে তিনি প্রথম রানার আপ হন। আর সেই সূত্র ধরেই জ্যোতি ফ্যাশন দুনিয়ায় বা ফ্যাশন জগতে প্রবেশ করেন। এরপর বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতায় জ্যোতি অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। আর তারপরেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় 'স্টার' হয়ে ওঠেন। করোনার সময়কালে তিনি তাঁর পেশা হিসেবে youtube কে বেছে নেন এবং একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন।
বিলাসবহুল জীবনযাপনের মধ্যেই কি লুকিয়ে ছিল গুপ্তচর বৃত্তির পেশা?
জ্যোতি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে ভ্রমণ মূলক ভিডিও শেয়ার করতেন, যেখানে তিনি পাকিস্তান ভিত্তিক ভ্রমণ মূলক ভিডিও বেশি শেয়ার করতেন - যা তাকে খুব তাড়াতাড়ি বেশ জনপ্রিয় করে তোলে এবং তিনি একাধিকবার ভিডিও তৈরীর জন্য পাকিস্তানের যান এবং ভিডিও বানান। তাঁর ভিডিওগুলিতে পাকিস্তানের মানুষের জীবনযাত্রা, সেখানকার মন্দির, বাজার ইত্যাদি নিয়ে তিনি তৈরি করতেন, যা তাঁকে খুব কম সময়ের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা এনে দেয় এবং যথারীতি তিনি youtube থেকে "সিলভার বাটন" অর্জন করেন। অর্থাৎ ফ্যাশন জগতের গ্ল্যামার এবং তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে ভ্রমণ মূলক ভিডিওগুলি তাঁকে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে সাহায্য করে। তবে তার মধ্যেই কি লুকিয়ে ছিল গুপ্তচর বৃত্তির পেশা? - এই প্রশ্ন তাঁকে ঘিরে উঠতে শুরু করেছে।
জ্যোতির বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য কে বা কারা অর্থ যোগাত?
জ্যোতি মালহোত্রা খুবই ঘনঘন বিদেশ সফর করতেন। তিনি মূলত থাইল্যান্ড, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশগুলিতে ঘুরতে যেতেন এবং সেখানে গিয়ে তাঁর চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানাতেন। তবে তিনি যে ঘনঘন বিদেশ সফর করতেন তার জন্য মোটা টাকা প্রয়োজন ছিল - সেই টাকা তিনি তাঁর সীমিত আয় থেকে কিভাবে ম্যানেজ করতেন? - সেই বিষয়েও প্রশ্ন উঠছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান যে জ্যোতি মালহোত্রাকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছিল আর তারাই তাঁকে অর্থ যোগাত। অর্থাৎ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এদেশের গোপন তথ্য পাচার করত জ্যোতি মালহোত্রা।
গ্রেপ্তারের পর জ্যোতির সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্টগুলিতে হু হু করে বেড়েছে ফলোয়ারের সংখ্যা
জ্যোতি মালহোত্রা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁকে তদন্তকারী অফিসাররা যখন জিজ্ঞাসাবাদ করেন তখন তিনি সম্পূর্ণভাবে নীরব থেকেছেন কিন্তু তাতে তাঁর জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি। বরং তাঁর জনপ্রিয়তা হু হু করে একদিনের মধ্যেই খুবই বেড়ে গিয়েছে। হঠাৎ করে ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইবার ৪ হাজার ছাড়িয়েছে এবং ইনস্টাগ্রামে ৭ হাজার ফলোয়ার হয়েছে। যদিও এই দুটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট আপাতত ব্লক হয়ে যেতে পারে বলেই সূত্র অনুযায়ী জানা যায়।
মোহময়ী দুনিয়ায় লাস্যময়ী জ্যোতির জীবনযাপন
জ্যোতি বিদেশ সফরে গিয়ে রীতিমতো ভিআইপির সুযোগ সুবিধা পেত, বিশেষ করে পাকিস্তান সফরে সেই সুযোগ সুবিধা আরও বেশি ছিল। তিনি বিদেশে বিলাসবহুল হোটেলে থাকতেন এবং বিমানে তিনি বিজনেস ক্লাসে সফর করতেন। এছাড়া বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর সময় তিনি বিলাসবহুল গাড়িতে ঘুরে বেড়াতেন। গয়নার দোকানে দামি দামি গয়না কিনতেন। এহেন জ্যোতিকে পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে এবং দেশের গোপন তথ্য পাচার করার অভিযোগে হরিয়ানার পুলিশ গত শুক্রবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওগুলি। বিলাসবহুল এই জীবন যাপনের জন্য জ্যোতি মালহোত্রাকে কে বা কারা টাকা পাঠাতো? কেন পাঠাতো সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা।

Comments