Mamata Banerjee on Banglar Bari
'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের টাকা কবে পাবেন? কিভাবে পাবেন? আর কত করে পাবেন? সবকিছু জানিয়ে দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী
২০২৬ সালের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের সূচনা রাজনৈতিকভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ।

২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই রাজ্য সরকার 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের জন্য আরও ১৬ লক্ষ মানুষকে টাকা দেবে। আজ মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৭ ই ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা উল্লেখ করে 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের শুভ সূচনা করলেন। আর এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করেই এই রাজ্যে শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন, কারণ ২০২৬ সালে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন, সেই নির্বাচনে বাংলার বাড়ি প্রকল্প কতটা প্রভাব ফেলতে পারে সে বিষয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। আর সেই কারণেই বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়ার এই ঘোষণাকে রাজনৈতিক দিক থেকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন অনেকেই।
'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে আপনি মোট কত টাকা পাবেন?
আজ অর্থাৎ ১৭ই ডিসেম্বর নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আজ থেকে ১২ লক্ষ মানুষের ব্যাংক একাউন্টে বাড়ি তৈরির টাকা ঢুকবে, অর্থাৎ বাংলার বাড়ি প্রকল্পের জন্য প্রথম পর্যায়ে মোট ১২ লক্ষ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকবে। আজ নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের জন্য বাংলার বাড়ি প্রকল্পের শুভ সূচনা করে জানালেন মোট দুটি কিস্তিতে ঢুকবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা।
প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হবে ৬০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তিতেও দেওয়া হবে আরও ৬০ হাজার টাকা। অর্থাৎ দুটি কিস্তি মিলিয়ে এই প্রকল্পে মোট দেওয়া হবে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা। শুধু ১২ লক্ষ মানুষকেই নয়, আরও ১৬ লক্ষ মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এহেন প্রকল্পের সূচনা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে মোট ২৮ লক্ষ মানুষ টাকা পাবেন
আজকের দিনটিকে অর্থাৎ ১৭ ই ডিসেম্বর দিনটিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'ঐতিহাসিক দিন' বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, রাজ্য সরকার তার সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই বাংলার বাড়ি প্রকল্পটিতে প্রথম পর্যায়ে মোট ২১ টি জেলার ১২ লক্ষ পরিবারকে বাড়ি তৈরীর জন্য টাকা দেবে। বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হবে দুটি কিস্তিতে। প্রথম পর্যায়ে ১২ লক্ষ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া প্রাপ্য টাকা। প্রথম কিস্তিতে এই ১২ লক্ষ পরিবার পাবেন ৬০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে আরও ৬০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হবে অর্থাৎ মোট বাড়ি তৈরির জন্য এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দেওয়া হবে।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে ঢুকবে। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকারের খরচ হবে মোট ১৪ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। তবে এখানেই শেষ নয়, পরে আরও ১৬ লক্ষ মানুষকে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ মোট ২৮ লক্ষ মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যারা সুবিধে পাচ্ছেন অর্থাৎ যে ১২ লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন, তাঁরা ছাড়াও বাকি থেকে যাচ্ছেন যোগ্য আরও ১৬ লক্ষ মানুষ, যারা পরবর্তী সময়ে টাকা পাবেন।
সারা রাজ্য জুড়ে সার্ভে, যোগ্য মোট ২৮ লক্ষ
এই প্রকল্পের জন্য সারা রাজ্য জুড়ে ২৭ হাজারেরও বেশি টিম, প্রায় ৩৬ লক্ষ সার্ভে করেছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মোট ৩৫ লক্ষ মানুষের বাড়িতে গিয়ে সার্ভে করেছেন। যাদের মধ্যে মোট ২৮ লক্ষ মানুষ যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। ২৮ লক্ষ যোগ্য মানুষের মধ্যে ১৬ লক্ষ মানুষকে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা প্রথমবারে দেওয়া হচ্ছে আর বাকি যে ষোল লক্ষ মানুষ বাকি থেকে যাচ্ছেন অর্থাৎ এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম বারে আসতে পারছেন না তাদেরকেও ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই দিয়ে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর
নবান্ন থেকে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সূচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, 'আবাস যোজনায় বাংলা ছিল এক নম্বরে কিন্তু তিন বছর ধরে সেই বাংলার মানুষরা বঞ্চিত, প্রাপ্য টাকা দেয়নি কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি।' এছাড়া ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়ার বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্র থেকে মোট ১ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা পাওনা, কিন্তু কেন্দ্র তা দিচ্ছে না। তাই তিনি বলেন - "আমরা ভিক্ষা চাই না ন্যায্য অধিকার চাই।"
বাংলার বাড়ি প্রকল্পের বিষয়ে খুঁটিনাটি
১) প্রথম পর্যায়ে ১২ লক্ষ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে প্রাপ্য টাকা।
২) আজ থেকেই সেই টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যাবে।
৩) দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৬ লক্ষ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা।
৪) অর্থাৎ মোট ২৮ লক্ষ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বাড়ি তৈরির টাকা।
৫) দুটি কিস্তিতে এই টাকা দেওয়া হবে। টাকার মোট পরিমাণ এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা।
৬) প্রথম কিস্তিতে পাবেন ৬০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে পাবেন ৬০ হাজার টাকা।
৭) যোগ্য পরিবারের হাতে এই টাকা দেওয়া হবে এবং প্রাপ্য টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া হবে।
৮) ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির জন্য বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যাবে।
Comments